Tuesday, January 31, 2012

জনগন গনঅভূত্থানের জন্য প্রস্তুত : প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্বের


জনগন গনঅভূত্থানের জন্য প্রস্তুত : প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্বের
কাওসার মাহমুদ (কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক): বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা এখন নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের রায় বা শাসনে রুপ নিয়েছে বললে হয়ত কেউ দ্বিমত করবেন না। একই সাথে বাংলাদেশে প্রচলিত দ্বিধারার রাজনীতিতে এই সংখ্যাগরিষ্ট জনগণের রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা কোথায় তাও কিন্তু মোটামোটি পরিস্কার নয়। জনগণের সঠিক রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ না ঘটলে দ্বিধারার রাজনৈতিক দলগুলোর আনুগত্য কিংবা দাসত্বেই আমাদের গণতন্ত্র ঘুরপাক খাবে কিংবা স্পষ্টতভাবে বললে বলতে হয় এখনও ঘুরপাক খাচ্ছে। ফলে এই নিশব্দ ঘুর্ণণে শুধু জনগণেরই ক্ষতি হচ্ছে না, ক্ষতি হচ্ছে প্রকৃত রাজনীতিরও - এই চেতনাবোধ যে নেই আমাদের সমাজে তা কিন্তু মোটেই সঠিক নয়, কিন্তু সংখ্যাগত দিক থেকে অনেক কম নিসন্দেহে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সম্পন্ন জনগোষ্ঠির সংখ্যা সংখ্যার ভিত্তিতে কম হলে সেখানে কিভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব সেই জিজ্ঞাসার উত্তর শুধু নির্বাচন নয় সেটা অল্প-বিস্তর সকলেই বুঝে। সেই সাথে নির্বাচন পদ্ধতিতে দলীয় সরকারের প্রশাসনিক প্রভাব, প্রশাসনিক লোকবলের নৈতিকতার অভাব ইত্যাদি উপসর্গ যোগ হলে তথাকথিত সেই গণতন্ত্র কতখানি ভয়ংকর এবং বিপদজনক হতে পারে তার উর্বর উদাহরণ হল আমাদের বাংলাদেশ।
ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে ১৯৭০ সালে গণরায়ের পক্ষে ক্ষমতা হস্তান্তরে পাকিস্তানী শাসকবর্গ অস্বীকার করলে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটে। স্বাধীনতা পূর্ব ২৩ বছরের করুন ইতিহাসের আমাদের জনগোষ্ঠিও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের শাসন ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলো তা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্বাধীনতার মাত্র তিন বছরের মধ্যেই বহুদলীয় গণতন্ত্রের কিংবা গণতন্ত্রের ধারনা থেকে বের হয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার ধারনার প্রবর্তন করা হয় সংবিধানের মৌলিক সংশোধনের মধ্য দিয়ে যা ৪র্থ সংশোধনী নামে পরিচিত। এই ধারনাটি কতখানি অগণতান্ত্রিক কিংবা যুক্তিযুক্ত সেই আলোচনাতে না গিয়ে একটি মৌলিক প্রশ্ন তোলা সম্ভব। আবেগে বশীর্ভূত হয়ে এই অগণতান্ত্রিক ধারনাকে সামগ্রিক জনগোষ্ঠির মধ্যে থেকে একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠি ধারন করে রাখে তবে সেখানে কিভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন করাটাই স্বাভাবিক। কেননা, রাজনীতি ধর্ম নয়, রাজনীতিকে ধর্ম বিশ্বাসের মত আবেগ দিয়ে বিবেচনা করলে নির্বাচনে দিনের প্রথম প্রহরেই মাঝিরা নিজ নিজ নৌকা নিয়েই ভোট কেন্দ্রে যাবে। রাজনীতি নদীর স্রোতের মত সময়ের বিবর্তনে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, গণমানুষের মৌলিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজনীতির দিক-প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়, তৈরী হয় নতুন রাজনৈতিক ইস্যু। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে দেশ-বিদেশের রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুর নানাদিকগুলোর উপর আমাদের নিজস্ব যুক্তিসংগত মতামত থাকা উচিত, শুধু ক্রিকেট নিয়ে না থেকে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা উচিত- এতে যুব সমাজের রাজনৈতিক চেতনার স্তর আরো উন্নত হবে। তবে এখানে একটি কথা বলা উচিত, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে এক শ্রেণীর সুবিধাপ্রাপ্ত এনজিও টাইপের নীতিবান শ্রেনীর সুশীল তত্ত্বে আমাদের সমাজের নতুন প্রজন্ম ধোকা খেয়ে রাজনীতিবিমুখ হয়ে পড়ছে, এবং একই সাথে রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদদেরকে নেতিবাচক সমালোচনা করা এদের একটি ফ্যাশনে রুপ নিয়েছে। এই ফ্যাশনে অংশ গ্রহন না করে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে রাজনীতিতে আরও সক্রিয়ভাবে প্রবেশ করে ধৈর্য্য সহকারের এর ভিতরে গণতন্ত্রের চর্চা বা অনুশীলনের চেষ্টা করতে হবে। কারন, একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক স্থিতিশীলতা, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষা এবং সর্ব প্রকার উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হলো সাম্রাজ্যবাদ শক্তিগুলোর প্রভাবমুক্ত নিজস্ব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। একই সাথে স্থানীয় সমস্যাগুলোর নানাবিধ কারণসমুহ চিহ্নিত করে একে জাতীয় কাঠামোতে কিভাবে সমাধান করা যায় তারও পূর্বশর্ত হলো রাজনীতি।


রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক দল পরিচালনাতে গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামোতে ভিন্নতা নেই, উভয় ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা একান্ত জরুরী। রাষ্ট্র বা সংবিধান নিজে নিজে এটির নিশ্চয়তা দিতে করতে পারবে না, এটি নিশ্চিত করতে হলে আমাদের গণমানুষের সচেতনার প্রয়োজন, শুধু তাই নয়, এই সচেতনার প্রতিফলন থাকতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোর নীতি-নির্ধারণে এবং বাস্তবায়নে। রাজনৈতিক দল এবং জনগোষ্ঠি কোন বিচ্ছিন্ন উপাদান নয়। জনগোষ্ঠির রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার উদ্দীপনা, উন্নয়নের মৌলিক ধারনার সৃষ্টি ইত্যাদির কাঠামো ও বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারনের দায়িত্ব হলো রাজনৈতিক নেতৃত্বের। রাজনৈতিক নেতৃত্বের দূর্বলতা আমাদের কাম্য নয়, বরং ফটোসেশনের রাজনীতি, দূর্নীতিবাজ এবং সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দুরে থাকতে হবে। সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্বই কেবল গণমানুষের রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটিয়ে রাজার-নীতি রাজনীতিকে গণ-নীতিতে রুপ দিতে পারে- এটাই হলো প্রকৃত গণতন্ত্র। আর স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব দেশেই কেবলমাত্র বহুদলীয়, বহুমতের রাজনৈতিক কাঠামোতে প্রকৃত গণতন্ত্র গড়ে তোলা সম্ভব অন্যথায় এই ধারনার অস্তিত্ব নেই।

বর্তমানে দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, রাজনীতি, জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সব কিছুই এখন গভীর সঙ্কটে পড়েছে। বাংলাদেশের সীমান্তে ভারত প্রতিদিন নির্বিচারে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা করছে। বাংলাদেশী নাগরিকদের ভারত সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে বিবস্ত্র করে পিঠে বাঁশ বেঁধে মধ্যযুগীয় বর্বরতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। অথচ সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী বলেছেন, এই জাতীয় ঘটনা পূর্বেও ঘটেছে এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে - এইটা লজ্জা, জাতীয় লজ্জা। শুধু এই কথার জন্যেই তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতিরা মামলা হতে পারে। এর আগে ভারতের বিএসএফ পনের বছরের কিশোরী ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছিল। শুধু তাই নয়, প্রায় একই সময়ে ভারতের বিএসএফ একজন বাংলাদেশী বিজিবি সদস্যকে ধরে নিয়ে গিয়ে অবর্ণনীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে দু’দিন পর তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেরত পাঠিয়েছে। সরকারের আরেক মন্ত্রী বললে, ওই বিজিবি সদস্য নিরাপত্তার জন্য নিজে গিয়ে বিএসএফের কাছে ধরা দিয়েছিল। এই জাতীয় বিচার-বহির্ভূত হত্যার জন্য বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলো রুটিন মাফিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। সুস্পষ্টভাবে বললে খুব সহজেই বলা সম্ভব, সরকার নিজেই ইচ্ছাকৃতভাবে সঙ্কটগুলো এমনভাবে তৈরী করছে, যাতে মনে হতে পারে জনগণ যেন কোথাও ঠিকমতো স্থির হয়ে দাঁড়াতেই না পারে। সরকারের ভারততোষণ এমন নীচু পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এদের এখন আর বাংলাদেশী নাগরিকই মনে হয় না, মনে হয় ভারতীয় বাংগালীযে কেউই মনে করতে পারে, বাংলাদেশটি যেন এক উপনিবেশে পরিণত হতে যাচ্ছে আর এই সরকার সেই ঔপনিবেশিক শাসকদের প্রতিনিধি মাত্র। এখানে বলা প্রয়োজন, ভারতের ‘বস্তা বস্তা টাকা আর পরামর্শে’ ক্ষমতায় আসা মহাজোট সরকার তার কোনো প্রতিবাদ জানাতে পারেনি এখন অবধি

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা অনেক দিন আগে থেকেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যাবতীয় কর্মকাণ্ড তদারক করে আসছে বলে খবরে প্রকাশ, যা কোনো আন্তর্জাতিক আইনেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে সরকার প্রধান। কথিত অভ্যুত্থান পরিকল্পনার পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ”বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারকে অগণতান্ত্রিক উপায়ে উৎখাতের চেষ্টা করা হলে ভারত তার পাশে দাঁড়াবে”। অর্থাৎ ভারতের কাছে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি আর গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখানে উল্লেখ, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইফতেখার সাহেব বলেছিলেন, তারা ঢাকা-দিল্লীর সম্পর্কে এমন এক জায়গায় নিয়ে যাবেন সেখান থেকে ফেরার আর সুযোগ থাকবে না। তারই অংশ হিসাবে, কিছুদিন আগে ভারতীয় প্রবীন নেতা প্রনব মুখার্জি ঢাকা ঘুরে গেলেন, কিন্তু দেশের বিরোধী নেতার সাথে না দেখা করেই, এই সামান্য সোজন্যবোধেরও আওতায় বাংলাদেশ পড়ে না এখন তাদের কাছে।

সরকারের অনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের গ্রামীণ ও শিল্প অর্থনীতি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। বর্তমানে দেশে কোনো দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ নেই, শেয়ারবাজার মৃতপ্রায়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও জিনিসপত্রের দামে ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। মালেয়েশিয়া, দক্ষিন কোরিয়াসহ মধ্যপাচ্যের শ্রম-বাজার ধবংস করে দিয়ে ওটা তুলে দেওয়া হয়েছে ভারতীয়দের অনুকূলে। বিদ্যুৎ, তাপ-বিদ্যুৎ সহ জ্বালানী খাতের নিয়ন্ত্রণভার ভারতীয়দের হাতে তুলে দেবার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা নব্য ইস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানী এয়ার-টেলকে দেওয়া হয়েছে অতি সুক্ষ্মভাবে। দেশের তরুন বা ছাত্র সমাজ যেন এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় না হতে পারে তার যথাযথ ঔষধ এখন তৈরীঃ ড্রাগ, অপসংস্কৃতির গান-বাজনা, আকাশ সংস্কৃতি ইত্যাদি আধুনিকতার নামে দেশীয় সংস্কৃতির কাঠামো ভেংগে দেওয়া ইত্যাদি, এর উদাহরন স্বরুপ দেখা যাবে নিরপেক্ষতার চাদর গায়ে দিয়ে আওয়ামী সুশীল শিক্ষিকের ছাত্রী হলে ড্যান্স, এর নাম আধুনিকতা । ট্রানজিট, ট্রানসশিপমেন্ট ইত্যাদিকে কানেকটেভিটির নামে প্বার্শবর্তী দেশকে এক তরফা সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, সরকার প্রধানের ভারত সফরে ৫০-দফা যে স্মারক চুক্তির কথা বলা হচ্ছে তার বিস্তারিত কিছুই জানা যায়নি কিংবা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও বিষয়টি রাখা হয়নি। উপরন্তু ভারত সফর শেষে সরকার প্রধান বলেছিলেন, “জয়ী হলাম আজ”। কিসের জয়, তিতাস নদীর বুক চিড়ে আজকে দেওয়া হচ্ছে ভারতকে ট্রানজিট, করিডোরের ব্যবস্থা। এমনিতেই, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ক্ষুব্ধ।

এমতাবস্থায়, রাজনৈতিক-সামাজিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষা করে সকল প্রকার ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড পরিহার করে একটি গণমুখী আন্দোলন গড়ে তুলার জন্যে জনগণ প্রস্তুত রয়েছে - প্রয়োজন যোগ্য এবং নতুন নেতৃত্বের। যে নেতৃত্ব নিশ্চয়তা দেবে জনগণের চাহিদামূলক রাজনীতির সনাতন-ধারার আমূল পরিবর্তন, থাকবে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা। এর জন্যে আমাদের দরকার, এক দলীয় নয়, বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চার বাস্তবায়ন- প্রকৃত গণতন্ত্র। দেশের জনগনকে রক্ষা করতে হলে, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হলে যে দেশপ্রেম প্রয়োজন তার শেকড় প্রোথিত আছে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ রাজনীতির মূল দর্শনে। আর তাই, সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ শহীদ জিয়ার ১৯ দফা বাস্তবায়নের রাজনৈতিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে হবে জাতীয়তাবাদী ধারার সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের। কারণ, দেশপ্রেমিক জনগণ এখন প্রস্তুত আছে নতুন জিয়ার আগমনের প্রতিক্ষায়।

Save Bangladesh : No More Farakka
কাওসার মাহমুদ
বিএনপি, ডেনমার্ক
৩০শে জানুয়ারি, ২০১২

Tuesday, January 17, 2012

শহীদ জিয়াঃ প্রেক্ষাপট ১৯ দফা

১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে মুষ্টিমেয় কিছু বেঈমানের জন্যে বাংলা তার স্বাধীনতা হারালে বাংলার জনগন সে সময় থেকেই স্বাধীনতা ফিরে পাবার কিংবা আত্ম-মর্যদাশীল জাতি হিসাবে বিশ্ববুকে বেচে থাকার প্রয়াসে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সংগ্রাম গড়ে তুলেছে।  কিন্তু স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে আত্ম-মর্যাদাশীল জাতি হিসাবে বেচে থাকার রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছেন বহু-দলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা  শহীদ প্রেসিডেন্ট বীর উত্তম জিয়াউর রহমান।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে কিছু বেঈমান এবং কুচক্রীদের সুক্ষ্ম পরিকল্পনায় মুক্তিযুদ্ধের পরে স্বাধীন-বাংলাদেশের সংবিধানে পার্শ্ববর্তী দেশের রাজনৈতিক আদর্শ তথা সেক্যুলারিজ জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া হয়। এক দলীয় আওয়ামী বাকশালী অপশাসনে বাংলাদেশ  তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনিত হয়,  জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠে – এমনই এক চরম রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার  প্রেক্ষাপটে ৭ই নভেম্বরে সিপাহী-জনতা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে  বাংলাদেশের জনগন আবারো মেজর জিয়ার কন্ঠস্বর শুনতে পান। বাংলাদেশের জনগন এই একই কন্ঠস্বর শুনেছিলো সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘোষনার ডাকে- মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষনা দেবার পাশাপাশি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধেরও ডাক দেন। ঠিক সেই সময়ে আওয়ামী  সর্বোচ্চ নেতৃত্ব  ক্ষমতা হস্তান্তরের বিভিন্ন পন্থা নিয়ে পাকিস্তানের সেনা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাতে ব্যস্ত ছিলেন- এমনই এক পর্যায়ে ২৫শে মার্চ রাতে অপরাশেন সার্চ লাইটের নামে  নিরস্ত্র জনগনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে পাকিস্তানের বর্বর শাসকগোষ্ঠি,  বাংলার মাটি রক্তে রঞ্জিত হয়ে উঠে  তথাকথিত আজকের চেতনাধারী আওয়ামী নেতারা পরিবার নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যান (পড়ুন পালিয়ে যান),  কোন দিক-নির্দেশনা না দিয়েই স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হোন আওয়ামী প্রধান নেতা। এমন এক চরম রাজনৈতিক সংকটে মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষনা এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ডাকে সারা বাংলাদেশে এক উদ্দীপনার তরংগ ছড়িয়ে পড়ে (*এইদিনেই আওয়ামী লীগের অপমৃত্যু ঘটে) -  গ্রাম-বাংলার খেটে খাওয়া কৃষক, তরুন, ছাত্র-ছাত্রীরা  সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে।
সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারী একজন মেজর বাংলাদেশের প্রধান হিসাবে কিংবা রাষ্ট্রপতি হিসাবে ১৯ দফার রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু করলে বেঈমান শ্রেণীটি সজাগ হয়ে উঠে, অপপ্রচার আর মিথ্যাচার শুরু করে দেয় মেজর জিয়ার নামে। সেই মিথ্যাচারের ডামাডোল বাজাইতে টিপাইমুখপন্থীরা এখনও সোচ্চার।
টিপাইমুখে ভারতীয় বাধ নির্মাণের পক্ষে সাফাই শুনা যায় আজকের আওয়ামী মন্ত্রীদের মুখে, ভারতকে বিনা ফিতে ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট দিয়ে সরকারের উপদেষ্টাদের নানা কথাবার্তা শুনা যায়,  পিলখানায় সরকারের পরোক্ষ সমর্থনে সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে এখন বিডিআর-এর নাম পরিবর্তন করে ভারতের অনুকরনে বাংলাদেশ বর্ডার বাহিনী রেখে সেনাবাহিনীকে ধর্মনিরপেক্ষতার নামতা পড়ানো শুরু করেছে আওয়ামী সরকার। এছাড়াও বিএসএফ সীমান্তে পাখির মত বাংলাদেশীদের হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখলেও দাসত্বের পুরুষ্কার সজোরে ঝাপটে ধরে রাখেন সরকার প্রধান।  বিদ্যুতখাতের নিয়ন্ত্রন ভারতকে দেবার নীলনকশা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে সরকার, টেলিখাত  ভারতীয় কোম্পানী এয়ারটেলকে দেওয়া হয়েছে, সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার জন্যে ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমবাজার সংকুচিত হতে শুরু করেছে – এহেন প্রেক্ষাপটে দেশকে বাচাইতে, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে শহীদ জিয়ার ১৯ দফা  বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। কি আছে এই ১৯ দফাতে?
প্রথম তিনটি দফাতে উল্লেখ আছেঃ
১। সর্বোতভাবে দেশের স্বাধীনতা, অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।
২। শাসনতন্ত্রের চারটি মূলনীতি অর্থাৎ সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের সমাজতন্ত্র জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রতিফলন করা।
৩। সর্ব উপায়ে নিজেদেরকে একটি আত্বনির্ভরশীল জাতি হিসেবে গড়ে তোলা।
শহীদ জিয়া ৮০ দশকের প্রথমদিকে এই দফাগুলোর কার্‍যক্রম শুরু করলেও দেখা যাবে এর ভিতরেই সেই সময়ের রাজনৈতিক বাস্তবতার সাথে বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক সংকটগুলোর মিল আছে।  বর্তমান সরকার সংবিধান পরিবর্তন করে একতরফাভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা কিংবা ভারতীয় রাজনৈতিক আদর্শ বাস্তবায়নের কূটকৌশলে লিপ্ত, এই কূটকৌশল বাস্তবায়নে ইসলামকে জংগীবাদ বা সাম্প্রদায়িকের সমার্থক বানিয়ে জনগণকে ধোকা দেবার চেষ্টাতে ব্যস্ত। এই কুটকৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্য নয়, এমন অনেক অপসংস্কৃতির আমদানী করা হচ্ছে। দেশের তরুন বা ছাত্র সমাজ যেন এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় না হতে পারে তার যথাযথ ঔষধ এখন তৈরীঃ ড্রাগ, অপসংস্কৃতির গান-বাজনা, আকাশ সংস্কৃতি ইত্যাদি আধুনিকতার নামে দেশীয় সংস্কৃতির কাঠামো ভেংগে দেওয়ার নীলনকশায় শশব্যস্ত বেঈমান গ্রুপ।
বিগত দিনে লগি-বৈঠার আন্দোলনের নামে দেশে দলীয় দ্বন্দ্বের আড়ালে দেশে এক সিভিল ওয়ার লাগানোর পায়তারাতে লিপ্ত ছিলো এই বেঈমানগ্রুপ, এদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা দেশের অখন্ডতার জন্যে বিপদজনক। শহীদ জিয়ার ১৯দফাতেও এই সকল বেঈমানের সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ থাকার উল্লেখ আছে।
ফারাক্কা বাধের পরিবেশগত কুফলের কথা বিবেচনা করে শহীদ জিয়া ভারতের সাথে আলোচনার ব্যাপারে ছিলেন অনঢ়। অথচ আজকে একের পর এক  বাংলাদেশের স্বার্থ উপেক্ষা করে বর্তমান সরকার ভারতের সাথে বিভিন্ন চুক্তি করছে, জনগনকে অন্ধকারে রেখেই।  বিদ্যুত, টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার পরে গার্মেন্টস শিল্পের নিয়ন্ত্রন অন্যের হাতে তুলে দেবার লক্ষ্যে নানামুখী স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপে সরকার অগ্রসর হচ্ছে।
রাজনীতির আদর্শগত ভিত্তির কাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি জনপ্রশাসনের রুপরেখার কথাও আছে তার প্রবর্তিত ১৯ দফাতেঃ
৪। প্রশাসনের সর্বস্তরে, উন্নয়ন কার্যক্রম এবং আইন-শৃংখলা রক্ষার ব্যাপারে জনসাধারনের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা।
অথচ আজ সর্বস্তরে দলীয়করন, উন্নয়ন কার্যক্রমের নামে দুর্নীতি আর পুলিশ প্রশাসনের অযোগ্যতা জনজীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছে।
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গ্রামীন সমাজ ব্যবস্থার উপর জোর দেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে যুগোপযোগী ব্যবস্থাগ্রহনেরও কথা বলা হয়েছেঃ
৫। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীন তথা জাতীয় অর্থনীতিকে জোরদার করা।
৬। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ করা এবং কেউ যেন ভুখা না থাকে তার ব্যাবস্থা করা।
৭। দেশে কাপড়ের উৎপাদন বাড়িয়ে সকলের জন্য অন্তত মোটা কাপড় সরবরাহ নিশ্চিত করা।
৮। কোন নাগরিক গৃহহীন না থাকে তার যথাসম্ভব ব্যাবস্থা করা।
৯। দেশকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করা ।
১০। সকল দেশবাসীর জন্য নূন্যতম চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা।
নারী এবং যুব সমাজকে কিভাবে দেশের মূল-উন্নয়নের অংশীদার করা যায় তারও রুপরেখার স্বপ্ন  শহীদ জিয়ার ১৯ দফাতে আছেঃ
১১। সমাজে নারীর যথাযোগ্য মর্যাদা প্রতষ্ঠা করা এবং যুব সমাজকে সুসঙ্গহত করে জাতি গঠনে উদ্বুদ্ধ করা।
দেশের বেসরকারী খাতকে উন্নয়ন এবং শ্রমিক-মালিকদের অধিকার নিয়ে শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়িত হলে আজকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো শক্রিশালী হতো। এখানে উল্লেখ, ৮০ দশকের প্রথম দিকে আজকের গার্মেন্টসের যাত্রা শুরু হয়েছিলোঃ
১২। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারী খাতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ দান।
১৩। শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি সাধন এবং উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে সুস্থ শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।
যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকুরীতে নিয়োগ এবং তাদের কাজে আগ্রহ  তৈরিরও পরিকল্পনার কথা পাওয়া যায়ঃ
১৪। সরকারি চাকুরীজীবিদের মধ্যে জনসেবা ও দেশ গঠনের মনোবৃত্তিতে উৎসাহিত করা এবং তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন করা।
একই সাথে শহীদ জিয়ার সূদুর প্রসারী চিন্তাভাবনার দর্শনও পরিলক্ষিত হয় তার বিভিন্ন কার্‍যক্রমে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে তার বিভিন্ন পদক্ষেপ সেই ৮০এর দশকেই নেওয়া হয়েছিলো তা না হলে এখন জনসংখ্যার পরিমান কত হতো তা অচিন্ত্যনীয়। একই সাথে মুসলিম দেশসমূহের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের শ্রম বাজার স্ফীত হচ্ছিলো সেটাকে সংকুচিত করার নানা কূটকৌশল এখন দৃশ্যমান। একই সাথে আঞ্চলিক উন্নয়নের কাঠামো বির্নিমাণের শহীদ জিয়ার স্বপ্ন সার্ক এখন প্রতিষ্ঠিত হলে নানা বিপরীমুখী স্রোতের কারনে সার্ক তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছুতে পারছে না।
১৫। জনসংখ্যা বিস্ফোরন রোধ করা।
১৬। সকল বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে সমতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা এবং মুসলিম দেশগুলির সাথে সম্পর্ক জোরদার করা।
এছাড়াও  প্রশাসনিক ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের বিষয়টিও এসেছে শহীদ জিয়ার ১৯ দফাতেঃ
১৭। প্রশাসন এবং উন্নয়ন ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ এবং স্থানীয় সরকাররে শক্তিশালী করা।
১৮। দুর্নীতিমুক্ত ন্যায়নীতিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা।
১৯। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার পূর্ন সংরক্ষণ করা এবং জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুদৃঢ় করা।
নিঃসন্দেহে বলা যায়, একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক স্থিতিশীলতা, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষা এবং সর্ব প্রকার উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হলো সাম্রাজ্যবাদ শক্তিগুলোর প্রভাবমুক্ত নিজস্ব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। একই সাথে স্থানীয় সমস্যাগুলোর নানাবিধ কারণসমুহ চিহ্নিত করে একে জাতীয় কাঠামোতে কিভাবে সমাধান করা যায় তারও পূর্বশর্ত হলো রাজনীতি। একই সাথে আমাদের মনে রাখতে হবে, রাজনীতি ধর্ম নয়, রাজনীতিকে ধর্ম বিশ্বাসের মত আবেগ দিয়ে বিবেচনা করলে নির্বাচন দিনের প্রথম প্রহরেই মাঝিরা নিজ নিজ নৌকা নিয়েই ভোট কেন্দ্রে যাবে। রাজনীতি নদীর স্রোতের মত সময়ের বিবর্তনে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, গণ মানুষের মৌলিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজনীতির দিক-প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়, তৈরি হয় নতুন রাজনৈতিক ইস্যু। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে দেশ-বিদেশের রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুর নানাদিকগুলোর উপর আমাদের নিজস্ব যুক্তিসংগত মতামত থাকা উচিত, শুধু ক্রিকেট নিয়ে না থেকে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা উচিত- এতে আমাদের যুব সমাজের রাজনৈতিক চেতনার স্তর আরো উন্নত হবে। তবে এখানে একটি কথা বলা উচিত, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে এক শ্রেণীর সুবিধাপ্রাপ্ত এনজিও টাইপের নীতিবান শ্রেণীর সুশীল তত্ত্বে আমাদের সমাজের নতুন প্রজন্ম ধোঁকা খেয়ে রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়ছে এবং একই সাথে রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদদেরকে নেতিবাচক সমালোচনা করা এদের একটি ফ্যাশনে রূপ নিয়েছে। এই ফ্যাশনে শোতে অংশ গ্রহণ না করে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে রাজনীতিতে আরও সক্রিয়ভাবে প্রবেশ করে ধৈর্য সহকারে এর ভিতরে গণতন্ত্রের চর্চা বা অনুশীলনের চেষ্টা করতে হবে।
এই গণতন্ত্রের বা বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চার বাস্তবায়নের পুর্বশর্ত হলো বাক-স্বাধীনতা। এই বাক-স্বাধীনতা হরন করে একদা যে বাকশাল গঠিত হয়েছিলো,তাদেরই সর্বশেষ প্রেতাত্মার আছড়ে বাংলাদেশ আবারো আছন্ন। দেশকে এই প্রেতাত্মা থেকে মুক্ত করতে হলে,দেশের জনগনকে রক্ষা করতে হলে,গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হলে যে দেশপ্রেম প্রয়োজন তার শেকড় প্রোথিত আছে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ রাজনীতির মূল দর্শনে। আর তাই, স্বাধীনতার ঘোষক, বীর উত্তম, সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতীক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নতুন আংগিকে মূল্যায়নের দিন এসেছে এবং  সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ শহীদ জিয়ার ১৯ দফা  বাস্তবায়নের রাজনৈতিক আন্দোলনেও অংশগ্রহনের জন্যে দেশপ্রেমিক জনগণ এখন প্রস্তুত।

Save Bangladesh : No More Farakka
কাওসার মাহমুদ